শিরোনাম
দেশের নাগরিকত্ব ছাড়ার শর্তে ভিনদেশের নাগরিক হলে এনআইডি নয় ইসরায়েলে অস্ত্রের চালান স্থগিত করল যুক্তরাষ্ট্র জয় দিয়ে বিশ্বকাপ প্রস্তুতি শুরু বাংলাদেশের পঞ্চমবারের মতো শপথ নিলেন ভ্লাদিমির পুতিন পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিল ভারত সরকারের সমালোচনামূলক গান, ইরানি র‍্যাপারের মৃত্যুদণ্ড যে গ্রামের বাসিন্দারা প্লেনে চড়েই অফিস-বাজারে যান! টিকটক নিষিদ্ধ হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২০টির বেশি অঙ্গরাজ্যে হুমায়ূন আহমেদ সাহিত্য পুরস্কার পেলেন ইমদাদুল হক মিলন ও মাহবুব ময়ূখ রিশাদ বিশ্বসেরার স্বীকৃতি পেল ইস্তাম্বুল বিমানবন্দর কানাডার পশ্চিমাঞ্চলে দ্রুত ছড়াচ্ছে দাবানল নিভে গেল বাতিঘর..... গুগল-অ্যাপলকে পেছনে ফেলে সবচেয়ে দামি ব্র্যান্ড অ্যামাজন পড়াশোনা শেষে ব্রিটেনে থাকতে পারবেন বিদেশি শিক্ষার্থীরা
Update : 5 April, 2019 00:59
গোয়েন্দা প্রতিবেদনে তোলপাড়

বাংলাদেশের ভেতর আরেকটি দেশ প্রতিষ্ঠা করার পাঁয়তারা করছেন সন্তু লারমা

বাংলাদেশের ভেতর আরেকটি দেশ প্রতিষ্ঠা করার পাঁয়তারা করছেন সন্তু লারমা
সন্তু লারমা-ছবি সংগৃহিত

কাজী আফিফুজ্জামান সোহাগ: পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সভাপতি সন্তু লারমাকে নিয়ে বাংলাদেশ সরকারের শীর্ষ একটি গোয়েন্দা সংস্থা বিস্ফোরক প্রতিবেদন তৈরি করেছে। এতে তার ব্যক্তিগত ও ষড়যন্ত্রের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের ভেতর আরেকটি দেশ প্রতিষ্ঠা করার পাঁয়তারা করছেন তিনি। বাংলাদেশের মত একটা স্বাধীন দেশের নাগরিক হয়েও সন্তু লারমা এখনো জাতীয় পরিচয়পত্র গ্রহণ করেননি। এটাই কি তার রাষ্ট্রের প্রতি আনুগত্যের বহিঃপ্রকাশ? তিনি নিজেকে বাংলাদেশের নাগরিক দাবি করেন অথচ তিনি নিজ এলাকার ভোটার নন। সম্প্রতি গোয়েন্দা প্রতিবেদনটি সরকারের শীর্ষ পর্যায়ে দেয়া হয়েছে। প্রতিবেদন তৈরির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এক গোয়েন্দা কর্মকর্তা নিউইয়র্ক মেইলকে জানান, সম্প্রতি পার্বত্য অঞ্চল ঘিরে উত্তপ্ত পরিস্থিতি বিরাজ করছে। সুনির্দিষ্ট উদ্দেশ্য নিয়ে পাহাড়কে করা হচ্ছে অস্থিতিশীল। একইসঙ্গে সেনাবাহিনীকে ঘিরে নানা ধরনের অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। এসবের পেছনে সন্তু লারমার ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রয়েছে বলে আমরা মনে করছি।

এদিকে নিউইয়র্ক মেইলের হাতে আসা গোয়েন্দা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১৯৯৭ সালে সরকারের সঙ্গে শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরকারী অপর পক্ষ ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকার অধিবাসীদের পক্ষ হতে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি’ এর সভাপতি সন্তু লারমা। তিনি কিন্তু পার্বত্য চট্টগ্রামের কোনো নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি ছিলেন না। এমনকি তিনি পার্বত্য চট্টগ্রামের সকল মানুষের প্রতিনিধিও নন। পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি পার্বত্য চট্টগ্রামের সকল মানুষের প্রতিনিধিত্বকারী সংগঠনও নয়। পার্বত্য চট্টগ্রামের অর্ধেক জনগোষ্ঠি বাঙালি। সন্তু লারমা কোনভাবেই তাদের প্রতিনিধি নন। বরং তিনি প্রচন্ড বাঙালি বিদ্বেষী। বাঙালিদের দাবি, তিনি ত্রিশ হাজার বাঙালি হত্যার নেতৃত্বদানকারী। কাজেই সন্তু লারমার সঙ্গে চুক্তি করে,সেই চুক্তি বাঙালিদের মেনে নিতে বলা অর্থহীন। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে,সন্তু লারমা বাংলাদেশ সরকারের সুবিধা ভোগ করছেন, সরকারের প্রতিমন্ত্রীর মর্যাদা নিয়ে আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন।

গোয়েন্দা প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে,পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতিদের মধ্যে চারটি আঞ্চলিক সংগঠন রয়েছে। পার্বত্য জনসংহতি সমিতি তাদের মধ্যে একটি। বাকীরা জনসংহতি সমিতির(সন্তু) গ্রুপের প্রবল প্রতিদ্বন্ধী ও বিরোধী। অনেক সাধারণ পাহাড়ি যারা কোনো আঞ্চলিক সংগঠনের সঙ্গে জড়িত নয়, কিন্তু হত্যা, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি ইত্যাদির কারণে সন্তু লারমা ও জনসংহতি সমিতির দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত। তারাও জনসংহতি সমিতিকে ঘৃণা করে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে,সরকারের সঙ্গে পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকার অধিবাসীদের পক্ষ হতে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (পিসিজেএসএস) এর নেতা সন্তু লারমা শান্তিচুক্তি স্বাক্ষর করেন। কিন্তু পিসিজেএসএস’র একটা অংশ প্রসীত বিকাশ খীসার নেতৃত্বে শান্তিচুক্তির বিরোধীতা করে ১৯৯৮ সালের ফেব্রুয়ারীতে পার্বত্য চট্টগ্রামের পূর্ণ স্বায়ত্তশাসন দাবী করে সশস্ত্র আন্দোলনের পথ বেছে নেয়। অথচ সন্তু লারমার পক্ষ হতে ওই সশস্ত্র দলকে বিপথ থেকে সুপথে আনার কোন প্রচেষ্টা লক্ষ্য করা যায়নি। সংশ্লিষ্টদের প্রশ্ন-এ থেকে কি অনুমিত হয় না যে সন্তু লারমার নির্দেশেই প্রসীত বিকাশ খীসা ওই সশস্ত্র দল গঠন করেছে? সরকারকে চাপে রাখতে এবং নিজেদের গোপন অভিলাষ চরিতার্থ করার জন্যই কি তাহলে সন্তু লারমা এই সশস্ত্র শাখার সৃষ্টি করেছে? তিনি কি বাংলাদেশের ভেতর আরেকটি দেশ প্রতিষ্ঠা করার পাঁয়তারা করছেন? গোয়েন্দা প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে,সন্তু লারমা এক সময় শান্তিবাহিনী নামের বাংলাদেশ বিরোধী একটি সন্ত্রাসী দলের নেতৃত্বে দিয়ে পাহাড়ে অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি করে। দাবী করা হয়ে থাকে, তার এই সন্ত্রাসী বাহিনীর হাতে দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীসহ ত্রিশ হাজার সাধারণ নিরীহ পাহাড়ি-বাঙালী নিহত হয়েছেন। শান্তি চুক্তির মাধ্যমে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে এসে প্রতিমন্ত্রীর মর্যাদায় দীর্ঘ দুই দশক আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান পদে অধিষ্ঠিত থাকলেও বাংলাদেশের কোনো জাতীয় দিবস তিনি পালন করেন না। এ নিয়ে রাঙামাটিতে বিভিন্ন সময়ে ব্যাপক আলোচনা সমালোচনা হলেও তিনি এতে ভ্রুক্ষেপ করেন না। প্রতিবেদনে উল্ল্যেখ করা হয়েছে, বিষয়টি নিয়ে রাঙামাটিবাসী সামাজিক মাধ্যমে বিভিন্ন প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়ে তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করতে থাকেন।

আবু উবায়দা নামের ফেসবুক আইডি থেকে প্রশ্ন করা হয়, পাহাড়ের তিন সার্কেল চীফ, সন্তু লারমা, প্রসীত খিসা কখন, কোথায় স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে শহীদ মিনারে ফুল দিয়েছে? আমরা জানতে চাই। পাহাড়ে এবং দেশে সুশীল ব্যক্তি, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জিবিত অগ্নী পুরুষের অভাব নেই। তারা কেন এই রাষ্ট্রদ্রোহীদের বিরুদ্ধে কিছু বলে না? অন্যদিকে সোহেল রেগান নামের ফেসবুক আইডি থেকে প্রশ্ন করা হয়,মন্ত্রী পদমর্যাদা ভোগকারী সন্তু লারমা কোন শহীদ মিনারে ফুল দিয়েছেন জাতি জানতে চায়?”

 

উপরে