শিরোনাম
পাকিস্তানের কাছে ৪.৩২ বিলিয়ন ডলার ন্যায্য হিস্যা চাইলো বাংলাদেশ গ্রিনকার্ডধারীদের জন্য নতুন সতর্কতা যুক্তরাষ্ট্রের গিনিতে ফুটবল ম্যাচে সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে প্রায় ১০০ নিহত ট্রান্সজেন্ডাররা নয়, শুধু জন্মগত নারীরাই নারী: ব্রিটিশ আদালতের রায় ওয়াকফ বিলের প্রতিবাদে উত্তাল কলকাতা দক্ষিণী নির্মাতার হাত ধরে খলনায়ক হয়ে ফিরছেন শাহরুখ ২০ সেপ্টেম্বর থেকে বন্ধ হয়ে যাবে যাদের জিমেইল টিকটক নিষিদ্ধ হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২০টির বেশি অঙ্গরাজ্যে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেলেন হান কাং বিশ্বসেরার স্বীকৃতি পেল ইস্তাম্বুল বিমানবন্দর ডোমিনিকায় নাইটক্লাবের ছাদ ধসে নিহত বেড়ে ৯৮ নিভে গেল বাতিঘর..... গুগল-অ্যাপলকে পেছনে ফেলে সবচেয়ে দামি ব্র্যান্ড অ্যামাজন পড়াশোনা শেষে ব্রিটেনে থাকতে পারবেন বিদেশি শিক্ষার্থীরা
Update : 9 January, 2019 02:13
নতুন সরকারের প্রথম দিন

দুর্নীতি রোধে দৃঢ়প্রত্যয়

দুর্নীতি রোধে দৃঢ়প্রত্যয়
মন্ত্রিসভার সদস্যদের নিয়ে মঙ্গলবার জাতীয় স্মৃতিসৌধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের পর নীরবতা পালন করছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
ঢাকা অফিস :

দুর্নীতি প্রতিরোধ ও সুশাসন নিশ্চিত করাই নতুন সরকারের বড় চ্যালেঞ্জ বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট খাতগুলোর বিশেষজ্ঞরা।

তাদের মতে, দারিদ্র্য দূরীকরণ, বেকারত্ব নিরসন, আর্থিক খাতের শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা, বিনিয়োগ বাড়ানো ও দলীয় কোন্দল নিয়ন্ত্রণও সরকারের জন্য বড় কাজ।

সর্বোপরি বিশেষজ্ঞরা জোর দিয়েছেন নির্বাচনী ইশতেহার বাস্তবায়নের ওপর। এটা যেন শুধু প্রতিশ্রুতির মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে সেদিকে নজর দেয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহবান জানান।

এদিকে মঙ্গলবার নতুন সরকারের প্রথম দিন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী এবং উপমন্ত্রীরাও নিজ দফতরে এসে চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো অগ্রাধিকার দেয়ার কথা বলেন। একই সঙ্গে তারা সুশাসন প্রতিষ্ঠা এবং দুর্নীতি রোধের পাশাপাশি ইশতেহার বাস্তবায়নের প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয় পায় আওয়ামী লীগ। সোমবার দলটি নতুন সরকার গঠন করে। মঙ্গলবার এ সরকারের যাত্রা শুরু হয়। নতুন সরকার প্রসঙ্গে সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সাধারণ সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, আমার ধারণা বিতর্কিত বলেই পুরনোদের বাদ দেয়া হয়েছে। এবার তরুণ, মেধাবীরা মন্ত্রিসভায় জায়গা পেয়েছেন।

প্রশ্ন হচ্ছে, তারা জনগণের দাবিকে গুরুত্ব দেবেন কিনা? তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ তার ইশতেহারে সুশাসন প্রতিষ্ঠার স্পষ্ট ঘোষণা দিয়েছে। এটি করতে হলে সমঝোতার রাজনীতির কোনো বিকল্প নেই।

বিভাজিত রাজনীতিতে যুদ্ধংদেহি অবস্থায় দলগুলো। যদি সমঝোতার রাজনীতির মাধ্যমে এই পরিস্থিতির অবসান না ঘটে, তাহলে পরিস্থিতি ভয়াবহ হবে। আর জনগণের ক্ষমতায়নে সরকার যত দ্রুত উপলব্ধি করতে পারবে, তত দ্রুত সুশাসন প্রতিষ্ঠা পাবে।

অর্থনীতিবিদ, উন্নয়ন বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে বর্তমান মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রীরা মনে করছেন নতুন সরকারকে কয়েকটি বিষয় মনোযোগ দিতে হবে। প্রধান ও প্রথম কাজ হবে দুর্নীতি দমন, সুশাসন নিশ্চিত, দারিদ্র্য দূরীকরণ, আর্থিক খাতের বিশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ, বিনিয়োগ বাড়ানো ও নির্বাচনীয় ইশতেহার বাস্তবায়ন করা। প্রধানমন্ত্রীও ইতিমধ্যেই দুর্নীতি ও মাদক ইস্যুতে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছেন। মন্ত্রিসভার সদস্যরাও প্রথম দিন অফিসে বসেই প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সুর মিলিয়ে সংশ্লিষ্ট ইস্যুগুলোতে জিরো টলারেন্সের ঘোষণা দেন।

দুর্নীতি দমন : দুর্নীতি দমন এ সরকারের প্রধান চ্যালেঞ্জ। বিশেষজ্ঞদের মতে, দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণও এ সরকারের ইশতেহারে গুরুত্বপূর্ণ স্থান পেয়েছে। আমরা (দুর্নীতিতে) চ্যাম্পিয়ন হওয়ার কলঙ্ক থেকে বের হয়েছি, তবে এখনও দুর্নীতিতে ২৫-২৬তম স্থান থেকে বের হতে পারিনি।

এ জায়গায় আত্মতুষ্টির কোনো অবকাশ নেই। উন্নয়ন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দুর্নীতি দমন নিয়ে আওয়ামী লীগ নির্বাচনী ইশতেহারে শক্ত বক্তব্য রেখেছে। আশা করব সেই অঙ্গীকার তারা যথেষ্ট আন্তরিকতার সঙ্গে বাস্তবায়ন করবে।

দুর্নীতি প্রসঙ্গে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন প্রথম দিনই বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছেন। এবার আমরাও দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতিতে যেতে চাচ্ছি।

সেক্ষেত্রে আমি বলি গণতন্ত্রের ভিতকে মজবুত করতে, দুর্নীতি দমনের কোনো বিকল্প নেই। ইতিমধ্যে দুর্নীতি দমন কমিশন অত্যন্ত শক্তিশালী হয়েছে, আগামীতে আরও শক্তিশালী হবে। সেক্ষেত্রে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় একটি ভালো দৃঢ় পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।

সুশাসন নিশ্চিত করা : সার্বিকভাবে সুশাসন নিশ্চিত করা নতুন সরকারের অন্যতম চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন বিশেষজ্ঞ মহল। একই সঙ্গে মানুষের আস্থাও অর্জন করতে হবে। তাদের মতে, আওয়ামী লীগ তার ইশতেহারে সুশাসন প্রতিষ্ঠার স্পষ্ট ঘোষণা দিয়েছে। এটি করতে হলে সমঝোতার রাজনীতির পথে আসতেই হবে। এর কোনো বিকল্প নেই।

যদি সমঝোতার রাজনীতির মাধ্যমে দলগুলো যদি এগিয়ে না যায় তবে অবস্থার অবনতি ঘটতে পারে, যা সুশাসনের জন্য শুভ হবে না। বিশেষজ্ঞদের মতে, জনগণের ক্ষমতায়নের বিষয়টি সরকার যত দ্রুত উপলব্ধি করতে পারবে, তত দ্রুত সুশাসন প্রতিষ্ঠা পাবে। মানুষের আস্থা অর্জনের জন্যও সরকারকে বেশ কিছু কাজ করতে হবে। এর মধ্যে অগ্রাধিকার পাবে জনগণের সঙ্গে সম্পৃক্ত ইস্যু। এগুলো দক্ষতার সঙ্গে সম্পন্ন করতে হবে।

আর্থিক খাতে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা : আর্থিক খাতে চরম বিশৃঙ্খলা চলছে। ঋণের নামে ব্যাংকগুলো থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা বের হয়ে গেছে। ঋণ নিয়ে টাকা ফেরত দিচ্ছে না।

বর্তমান খেলাপি ঋণের হার ১৩ শতাংশ হয়েছে। ফলে এ খাতের শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনাই হবে সরকারের চ্যালেঞ্জ। নতুন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল শপথ নিয়ে প্রথম দিনই বৈঠক করেছেন অর্থ মন্ত্রণালয় ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সঙ্গে। সেখানে তিনি ঋণখেলাপিদের বিষয়ে কঠোর মনোভাব পোষণ করেছেন। তিনি বলেন, খেলাপি ঋণ আদায়ে আত্মীয়স্বজন দেখা হবে না। আমরা কাউকেই চিনব না।

প্রত্যেককে টাকা ফেরত দিতে হবে। টাকা আদায়ের জন্য নির্মোহভাবে পদক্ষেপ নিতে হবে। তিনি বলেন, খেলাপি ঋণের বর্তমান হার ১৩ শতাংশ। এটি অনেক বেশি। এটি ৭ থেকে ৮ শতাংশ হলে ঠিক ছিল। এখন এটি নিচের দিকে নামিয়ে আনতে হবে। এজন্য প্রয়োজন শক্তিশালী পদক্ষেপ। যে ঋণ পরিশোধ করছে সে ভালো গ্রাহক, তাদের উৎসাহিত করা হবে। ভালো ঋণ গ্রহিতাকে প্রণোদনা দেয়া হবে। এটি হলে খারাপ ঋণ গ্রহীতারাও এগিয়ে আসবে।

ঢাকায় নিযুক্ত বিশ্বব্যাংকের লিড ইকোনমিস্ট ড. জাহিদ হোসেন বলেন, স্বল্পমেয়াদে ব্যাংকিং খাতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার পদক্ষেপ নিতে হবে। এক্ষেত্রে ইচ্ছাকৃত বড় মাপের খেলাপিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া, ঋণখেলাপিদের মদদদাতা প্রতিষ্ঠানকে জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে।

দারিদ্র্য দূরীকরণ : সরকারের দৃষ্টিতে প্রথম চ্যালেঞ্জ হবে দারিদ্র্য দূরীকরণ। গত কয়েক বছর ধরে দারিদ্র্য দূরীকরণ হার সে হারে কমছে না। শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে।

অপরদিকে সে হারে কর্মসংস্থানও সৃষ্টি হচ্ছে না। নতুন সরকারের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে মনে করা হচ্ছে দারিদ্র্য দূরীকরণই হবে প্রধান চ্যালেঞ্জ। সদ্য বিদায়ী অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত এ প্রসঙ্গে বলেন, সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা এবং আর্থিক খাতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার পাশাপাশি দারিদ্র্য দূরীকরণই হবে নতুন সরকারের প্রধান চ্যালেঞ্জ।

তিনি বলেন, ‘আগামী পাঁচ বছরে বাংলাদেশ অর্থনীতিতে অসাধ্য সাধন করবে। সরকারের ধারাবাহিকতা থাকার কারণে আশা করছি, এ সময় দেশ দারিদ্র্যমুক্ত হবে। বেকারত্ব নিরসনে চাকরির সুযোগ তৈরি করতে হবে। এজন্য বর্তমানে যে ধরনের চাকরির বাজার তৈরি হয়েছে সে ধরনের শিক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে।

অর্থনীতিবিদ খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ বলেন, রাজনীতি নিয়েও চ্যালেঞ্জ আছে। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সরকারকে খাত ধরে ধরে পরিকল্পনামাফিক কাজ করতে হবে। সরকারকে দুর্নীতি প্রতিরোধ এবং সুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

সুশাসন প্রতিষ্ঠা এবং জবাবদিহিতা না থাকলে ভোটের বিতর্ক জিইয়ে থাকবে। খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ বলেন, বেকার সমস্যাও সরকারের জন্য বড় একটি চ্যালেঞ্জ। এক কোটির বেশি হবে বেকার যুবক।

তারা না পারছে শ্রমিক হতে, না পাচ্ছে চাকরি। এই শিক্ষিত যুবকদের কাজে লাগাতে না পারলে, তারা অন্যদিকে চলে যেতে পারে- যা জাতির জন্য বড় ক্ষতি বয়ে আনতে পারে। তিনি আরও বলেন, আগে গ্রামের গরিব একজন বৃদ্ধা নিজ হাতে মুড়ি ভেজে বিক্রি করতেন। এখন কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানও মুড়ি বিক্রি করছে।

এখন কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করা সম্ভব। এজন্য কথায় আটকে না থেকে যথাযথ কমিটমেন্ট এবং কর্মপদ্ধতি নির্ধারণ দরকার। আওয়ামী লীগ নির্বাচনী ইশতেহারে বেকার সমস্যা দূরীকরণে প্রতিজ্ঞা করেছে। আমি আশা করছি, এই সরকার এ ব্যাপারে স্বচ্ছ একটি রূপরেখা দেবে, সে অনুযায়ী কাজ করবে।

বিনিয়োগ বৃদ্ধি : দীর্ঘদিন বিনিয়োগ খড়া চলছে। নতুন সরকার বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করবে এমনটি ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা। বিনিয়োগ বাড়ানো এ সরকারের আর্থিক খাতে একটি বড় চ্যালেঞ্জ।

নতুন সরকারের নির্বাচনের ইশতেহারে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি ১০ শতাংশে নেয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে। প্রবৃদ্ধির এ লক্ষ্য অর্জন করতে বিনিয়োগের হার জিডিপির আনুপাতিক হারে ৪০ শতাংশ দরকার।

এমন পরামর্শ দিয়েছেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ উপদেষ্টা এবি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম। তার মতে, বর্তমান বিনিয়োগের হার জিডিপির আনুপাতিক হারে ৩১ দশমিক ২ শতাংশে আছে। এক্ষেত্রে বেসরকারি বিনিয়োগ আনুপাতিক হারে বাড়াতে হবে। তিনি বলেন, বেসরকারি বিনিয়োগ বাড়াতে কিছু চ্যালেঞ্জ আছে।

যেমন- পরিবহন, বন্দর, গ্যাস, বিদ্যুৎ ব্যবস্থা ও ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টি করা। এর বাইরে সার্বিকভাবে সুশাসন নিশ্চিত করতে হবে। উল্লেখিত কাজগুলো সমন্বিতভাবে করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জ হচ্ছে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা। কারণ উচ্চশিক্ষিতের মধ্যে বড় একটি অংশ বেকার। এজন্য বিনিয়োগ বাড়ানোর সঙ্গে বিদ্যমান শিক্ষা ব্যবস্থাকে বাজারমুখী করে তুলতে হবে।

নির্বাচনীয় ইশতেহার বাস্তবায়ন : দুর্নীতিতে জিরো টলারেন্স, মাদক ও জঙ্গি প্রতিরোধসহ নানা প্রতিশ্রুতি দিয়ে আওয়ামী লীগের নির্বাচনীয় ইশতেহার ঘোষণা করা হয়েছে। আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারের ৬নং অঙ্গীকারটি হচ্ছে ‘সন্ত্রাস, সাম্প্রদায়িকতা, জঙ্গিবাদ ও মাদক নির্মূল।’ এটি সরকারের জন্য চ্যালেঞ্জ।

এদিকে প্রধানমন্ত্রী ইতিমধ্যে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছেন মাদকের ব্যাপারে। এক্ষেত্রে সফলতা এলেও ঘুষ-দুর্নীতি এখনও বন্ধ হয়নি। তৃতীয় মেয়াদে দুর্নীতির সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা সরকারের ছত্রছায়ায় আরও মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারে।

এটি মোকাবেলা সরকারের জন্য অন্যতম চ্যালেঞ্জ মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। তাদের মতে, নির্বাচনীয় ইশতেহার যেন শুধু প্রতিশ্রুতির মধ্যেই থেকে না যায়।

নির্বাচনীয় ইশতেহার প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, নতুন সরকারের চ্যালেঞ্জ একটাই- যে প্রতিশ্রুতি নিয়ে নির্বাচনে অংশ নিয়েছে এবং বিজয় পেয়েছে। দেশের জনগণের কাছে, জাতির কাছে ইশতেহারে যে ওয়াদাগুলো করেছেন সেটার বাস্তবায়নই হচ্ছে আমাদের বড় চ্যালেঞ্জ।

দলীয় কোন্দল : এদিকে টানা তিন মেয়াদে ক্ষমতায় যাওয়ায় আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দল মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পার এমন আশঙ্কাও করা হচ্ছে। এটি মোকাবেলা বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে উল্লেখ করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

তারা বলেন, নিজেদের মধ্যে আধিপত্য বিস্তার, টেন্ডার, দখলদারিত্ব নিয়ে গত ১০ বছরে কম হানাহানি হয়নি। তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় এসে এটি শক্ত হাতে মোকাবেলা না করলে সাধারণ মানুষ মুখ ফিরিয়ে নিতে পারে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের অনেকেই গণতন্ত্র বিকাশের কথাও বলেছেন। তারা বলেন, তৃণমূল থেকে কেন্দ্র পর্যন্ত সরকারে ও দলে গণতন্ত্রচর্চা সৃৃষ্টি করতে হবে। সবার সমঅধিকার প্রতিষ্ঠায় গণতন্ত্র বিকাশের বিকল্প নেই।

রাজনৈতিক দলগুলোর গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় জোর দিতে হবে। বর্তমান সরকারের অন্যতম লক্ষ্য ২০২১ সালের মধ্যে দেশকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করা। এজন্য দারিদ্র্যের হ্রাস করা জরুরি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ ও বিআইডিএসের সাবেক ডিজি এমকে মুজেরি বলেন, নির্বাচনের সময় অর্থনীতিতে এক ধরনের অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হয়। বিশেষ করে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে তা বেশি হয়।

এটি যত স্বল্পই হোক তা দূর করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে এখনই। যাতে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে শঙ্কা দূর হয় এবং বিনিয়োগে তারা আগ্রহী হন। এছাড়া নির্বাচনীয় ইশতেহারে অনেক প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে।

তা বাস্তবায়নে মধ্যমেয়াদি কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। এতে প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন সহজ হবে। মেগা প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন ধীরগতি হচ্ছে। এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে দ্রুততা আনতে হবে। না হলে মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নে বিলম্ব হলে এর সুফল পেতেও দেরি হবে। আর এসব প্রকল্পের ব্যয়ও অনেক বেড়ে যাবে।

উপরে