সরকারি চিকিৎসকদের ‘প্র্যাকটিসিং গাইডলাইন’ তৈরির নির্দেশ

সরকারি চিকিৎসকদের জন্য ‘প্র্যাকটিসিং গাইডলাইন’ তৈরি করতে বিশেষজ্ঞদের নিয়ে একটি স্বাধীন মেডিকেল কমিশন গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে সরকারি চিকিৎসকদের বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে প্রাইভেট প্র্যাকটিসের অনুমতি দিয়ে করা আইনটি কেন বাতিল ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করা হয়েছে। মঙ্গলবার বিচারপতি এফআরএম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কেএম কামরুল কাদেরের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই নির্দেশনা দেন।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আবদুল সাত্তার পালোয়ান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন এবিএম আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ (বাশার)।
স্বাস্থ্য সচিব, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের (বিএমডিসি) সভাপতি এবং বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) সভাপতিকে এই নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে।
পরে আইনজীবী আবদুস সাত্তার জানান, গত ৪ ফেব্রুয়ারি সরকারি চিকিৎসকদের প্রাইভেট প্র্যাকটিস বন্ধের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়েছিল। ওই রিটের শুনানি নিয়ে আজ আদালত এ আদেশ দিয়েছেন।
তিনি জানান, সারাদেশে সরকারি ব্যবস্থাপনায় যে চিকিৎসা ব্যবস্থা আছে সেটি আজ কলাপ্স হয়ে গেছে। আমরা আদালতে বলেছি, সরকারি চিকিৎসা ব্যবস্থা এভাবে চলতে পারে না। মানুষের জীবন নিয়ে ব্যবসা-বাণিজ্য হচ্ছে। এর মূল কারণ হলো সরকারি চিকিৎসকেরা প্রাইভেট প্র্যাকটিস করেন। প্রাইভেট প্র্যাকটিস যদি বন্ধ করা যায়, তাহলে সরকারি চিকিৎসায় একটা বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসবে। আদালত আমাদের শুনানি নিয়ে রুল জারি করেছেন এবং নির্দেশনা দিয়েছেন।
রিটের শুনানিতে আদালত বলেন, জীবন নিয়ে কেউ বাণিজ্য করুক, এটা আমরা চাই না। যদি চিকিৎসকরা রাত এক-দুইটা পর্যন্ত জেগে প্রাইভেট হাসপাতালে অপারেশন করেন, তাহলে দিনে এসে (সরকারি হাসপাতালে ডিউটির সময়ে) স্বাভাবিক থাকতে পারেন না। তাহলে কীভাবে তারা সকালে এসে সরকারি হাসপাতালে প্র্যাকটিস করেন, এটা তো প্রাকৃতিক পদ্ধতিরও পরিপন্থী।
এরপর আদালত সরকারি চিকিৎসকদের প্রাইভেট প্র্যাকটিসের অনুমতি দেওয়া ধারাটি (১৯৮২ সালের দ্য মেডিক্যাল প্র্যাকটিস অ্যান্ড প্রাইভেট ক্লিনিক অ্যান্ড ল্যাবরেটরি (রেগুলেশন) অর্ডিনেন্সের ৪ ধারা) কেন অসাংবিধানিক, বাতিল ও অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন। এই ধারায় বলা হয়েছে, সরকার নিবন্ধিত চিকিৎসকরা তাদের অফিস সময়ে প্রাইভেট প্র্যাকটিস করতে পারবেন না।
প্রসঙ্গত, গত ৪ ফেব্রুয়ারি অফিস সময়ে সরকারি চিকিৎকদের প্রাইভেট প্র্যাকটিস বন্ধে সরকারের নিষ্ক্রিয়তা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়। সংশ্লিষ্ট শাখায় রিটটি দায়ের করেন সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ আইনজীবী। তারা হলেন আবদুস সাত্তার পালোয়ান, সালাউদ্দিন রিগান, সুজাত মিয়া, মো. আমিনুল হক এবং মো. কাওছার উদ্দিন মণ্ডল।